শীতের এই ৫ রোগ প্রতিরোধের উপায়
শীতকাল শুধু উৎসবের আ’মেজই আনে না। সঙ্গে ঠান্ডা-ফ্লুসহ নানান ভাই’রাস নিয়ে আসে। শীতের এই মৌসুমে প্রায় সবাই এই সমস্যায় ভুগে থাকেন। তবে শুধু ঠান্ডা-জ্বরই নয় এই সময় দেখা দেয় আরো অনেক রোগব্যাধি।
বিশেষ করে পাচটি রোগ এসময় খুবই সাধারণ। চলুন জেনে নেয়া যাক সেসব স’ম্পর্কে। সেই সঙ্গে এই রোগ কী'’ভাবে প্রতিরোধ করবেন তাও জেনে রাখু’ন-
কোল্ড সোর
কোল্ড সোর হলো ঠোঁটের কোণে ওঠা যন্ত্র’ণাদায়ক ফুসকুড়ি যা আমাদের কাছে জ্বরঠোসা হিসেবে পরিচিত। এটি শীতের অন্যতম বিব্রতকর অ’সুস্থতা। সমীক্ষা অনুযায়ী, প্রতি দশজন লোকের মধ্যে সাতজনের শরীরে কোল্ড সোর সৃষ্টিকারী ভাই’রাস রয়েছে। কিন্তু যাদের শরীরে ভাই’রাসটি রয়েছে তাদের প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনেরই উপসর্গ প্রকাশ পায়।
আ’ক্রান্ত ত্বকের সংস্প’র্শ বা চুমুর মাধ্যমে কোল্ড সোর ছড়িয়ে থাকে। কোল্ড সোর সৃষ্টিকারী ভাই’রাসটি শরীরে সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও একজন থেকে আরেকজনে ছড়াতে পারে। অনেকের ধারণা যে, কোল্ড সোরের চিকিৎসা করা যায় না। এটি আসলে পুরোই ভুল ধারণা। অধিকাংশ ক্ষেত্রে কোল্ড সোর ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে নিজে নিজে দূর হলেও অ্যান্টিভাই’রাল ক্রিম ব্যবহারে নিরাময় দ্রুত করা যায়।
আরো পড়ুন: র’ক্তস্বল্পতা দূর করবে কুমড়ার পাতা
জয়েন্টে ব্যথা
শীতকালে অনেকের বাত জনিত জয়েন্টের ব্যথা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ঠান্ডা ও স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া জয়েন্টের ব্যথাকে উদ্দীপ্ত করতে পারে, বিশেষ করে বাতের ব্যথা। কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন যে বাতাসের ওজনে পরিবর্তনের (ব্যারোমেট্রিক প্রেসার) কারণে রগ, পেশি, হাড় ও কলাতে সংকোচন-প্রসারণ জনিত প্রভাব পড়ে বলে ব্যথা বেড়ে যায়। তবে জীবনযাপনে কিছু পরিবর্তন এনে ব্যথাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। জয়েন্টের ব্যথা কমানোর অন্যতম সর্বাধিক কার্যকরী পদ্ধতি হলো গরম সেঁক। গরম সেঁকের তাপ সংবহন বাড়াবে, যার ফলে জয়েন্ট ও পেশীতে পর্যাপ্ত পুষ্টি পৌঁছবে। এতে শরীর আরো নমনীয় হবে ও চলাফেরায় ব্যথা কমবে।
সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার
সিজনাল অ্যাফেক্টিভ ডিসঅর্ডার (এসএডি/স্যাড) হলো এক ধরনের বিষণ্নতা যা মৌসুমের পরিবর্তনের সঙ্গে স’ম্পর্কযু’ক্ত। তাই প্রতিবছর একই সময়ে স্যাডের উপসর্গ প্রকাশ পায়, সাধারণত শীত ও শরতে। নারীদের স্যাডের প্রবণতা পুরুষদের তুলনায় চারগুণ বেশি। বিশেষজ্ঞদের মতে, বিষণ্নতার অনুরূপ স্যাডের প্রধান উপসর্গ হলো- মেজাজ খিটখিটে হওয়া, কাজের প্রতি আগ্রহ কমে যাওয়া ও জীবনকে উপভোগের ঘাটতি।
স্যাডের আরো দুইটি উপসর্গ হলো- বেশি ঘুমানো ও বেশি খাওয়া। মেরিলিন গ্লেনভিল ডট’কমের পুষ্টিবিদ মেরিলিন গ্লেনভিল বলেন, ‘নিয়মিত শরীরচর্চা করলে স্যাডের উপসর্গকে পরাজিত করতে পারবেন, কারণ শরীরচর্চাতে ব্রেইন কেমিক্যাল এন্ডোরফিনস নিঃসরিত হয়- এটা শরীরচর্চার পর সুখের অনুভূতি দিয়ে থাকে। তবে দিনের বেলায় শরীরচর্চা করা সবচেয়ে উত্তম। কারণ এতে শরীর রোদের উপস্থিতিতে ভিটামিন ডি তৈরি করতে পারে। ভিটামিন ডি এর ঘাটতিও মনকে বিষণ্ন করে তোলে।
আরো পড়ুন: কুনি নখের সমস্যা দূর করবে শুকনো ম’রিচ
বদহ’জম
শীতকালে বদহ’জমের সমস্যা প্রায়ই দেখা যায়। এসময় খাবার খাওয়ার প্রতি সচেতন না হলে সহ’জেই অস্বস্তিকর পেটফাঁপা, ঢেঁকুর ওঠা ও বদহ’জম হতে পারে। এসব পরিপাকতান্ত্রিক সমস্যা একজন লোককে অলস করে তুলতে পারে। শীতকালে খাবারের ব্যাপারে সচেতনতার অভাবে বদহ’জম ও বুকজ্বালা করতে পারে। প্রায়ক্ষেত্রে চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার পর বদহ’জম হতে দেখা যায়। এক বসাতে অ’তিরিক্ত খাবার খেয়ে ফেললেও বদহ’জম হতে পারে। বদহ’জম হলে পাকস্থলির অ্যাসিড ওপরের দিকে এসে বুকজ্বালা হতে পারে।
হাঁপানি
শীতকালের স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে ছত্রাক বংশবৃদ্ধির সুযোগ পায়, যা অ্যাজমা অ্যাটাকের ঝুঁ’কি বাড়ায়। শীতকালে হাঁপানি রোগীদের ক’ষ্ট বেড়ে যাওয়ার দুইটি কারণ রয়েছে। প্রথম কারণ হলো- শীতের বাতাস ঠান্ডা ও শুষ্ক। অন্য কারণটি হলো- এসময় সাইনাস ও উর্ধ্ব শ্বা’সতন্ত্রে সংক্রমণ বেড়ে যায়। উভ’য়েই হাঁপানিকে প্রভাবিত করে বা অ্যাজমা অ্যাটাকের ঝুঁ’কি বাড়ায়। তাই শীতকালে হাঁপানিকে প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলো এড়াতে পারলে ঝুঁ’কি কমে যাবে।