লঞ্চে সন্তান প্রসব, নবজাতক ও বাবা-মায়ের যাতায়াত আজীবন ফ্রি
আজ সকালে ঢাকা থেকে বরিশালগামী এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে ভূমিষ্ঠ হওয়া নবজাতকের পরিবারকে নগদ অর্থ উপহার দিয়েছে লঞ্চ কর্তৃপক্ষ। সেই সঙ্গে ওই নবজাতক ও তার মা-বাবার প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চে যাতায়াত আজীবনের জন্য ফ্রি ঘোষণা করা হয়েছে। আজ শুক্রবার ১৯ আগস্ট ভোরে এ ঘোষণা দেন লঞ্চের সুপারভাইজার জিল্লুর রহমান।
এ সময় তিনি জানান, প্রিন্স আওলাদ লঞ্চে কোনো নবজাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। বিষয়টি লঞ্চ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। তারাও খুব খুশি হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ওই শি'শুর পরিবারকে লঞ্চের পক্ষ থেকে নগদ ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে শি'শু ও তার মা-বাবার জন্য এই লঞ্চে যাতায়াত ফ্রি করা হয়েছে।
এদিকে নবজাতকের মামি রুমকি বেগম বলেন, এখন বাচ্চা ও তার মা শারীরিক দিক দিয়ে সুস্থ আছে। আম'রা খুবই আনন্দিত। কোনো বিপদ ছাড়াই আল্লাহ আমাদের হেফাজত করেছেন। লঞ্চে একজন নার্স ছিলেন। তিনি পরাম'র্শ দিয়েছিলেন ভোরে সিজার করানোর জন্য। তবে একজন ধাত্রী পেয়ে যাওয়ায় সন্তান প্রসবে কোনো সমস্যা হয়নি।
এ সময় ধাত্রী বলেন, ওদের পাশের সিটেই আম'রা ছিলাম। অ'সুস্থ হয়ে পড়লে আমি নিজে তত্ত্বাবধায়ন করে সন্তান প্রসব করাই। প্রসূতির মা বলেন, আগামী মাসের ৬ তারিখ সন্তান প্রসবের তারিখ নির্ধারিত ছিল। গতকাল লঞ্চে ওঠার পরে অ'সুস্থ হয়ে পড়লে খবর পেয়ে আমিও চলে আসি। লঞ্চেই মাঝরাতে নাতি হয়েছে। এটি আমা'র মে'য়ের দ্বিতীয় সন্তান। ওর আরেকটি ১০ বছরের ছে'লে রয়েছে। লঞ্চের যাত্রী ফরিদা বেগম বলেন, সারারাত যাত্রীরা সেবা শুশ্রূষা করেছে। মা-ছে'লে দুজনেই ভালো আছে। ভোরে ছে'লেকে তার মায়ের কোলে দিয়েছি।
এদিকে ঢাকার নারায়ণগঞ্জ থেকে বাবার বাড়ি বরিশাল সদর উপজে'লার রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের শোলনা ফিরছিলেন অন্তঃসত্ত্বা ঝুমুর বেগম। সঙ্গে তার আরও ৫ স্বজন ছিলেন। প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চের ডেকে অবস্থানকালে রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রসব বেদনা ওঠে তার। গতকাল বৃহস্পতিবার ১৮ আগস্ট রাত ১টার দিকে ধাত্রীর সহায়তায় ছে'লে সন্তানের জন্ম দেন তিনি। নবজাতকের বাবা মো. হারিছ কুমিল্লার জামালপুরে মুরগি বিক্রির দোকানে শ্রমিকের কাজ করেন।