‘হাওয়া’ পরিচালকের বি'রুদ্ধে মা'মলাকারী কর্মক'র্তাকে শোকজ
‘হাওয়া’ সিনেমা'র পরিচালকের বি'রুদ্ধে মা'মলাকারী কর্মক'র্তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
সোমবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে চলচ্চিত্র অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান তিনি।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্ব মোরশেদুল ইস'লাম, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, তারিক আনাম খান, অমিতাভ রেজা চৌধুরী, এস এ হক অলীক, আফসানা মিমি, চঞ্চল চৌধুরী, মেজবাউর রহমান সুমন, সৈয়দ গাউসুল আলম প্রমুখ।
বৈঠক শেষে তথ্যমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে কয়েকটি সিনেমা আবার দর্শকদের হলে ফিরিয়ে এনেছে। সেই সিনেমাগুলোর একটি ‘হাওয়া’। এর পরিচালকের বি'রুদ্ধে একটি মা'মলা করা হয়েছে। আমি বিদেশে ছিলাম, জানার পর সংশ্লিষ্ট কর্মক'র্তাদের সঙ্গে কথা বলি, সেই মা'মলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। যে কর্মক'র্তা মা'মলা করেছেন, তাকে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আইনের যদি ব্যত্যয় হয়ে থাকে তাহলে পরিচালককে নোটিশ করতে পারতেন। সরাসরি কোর্টে গিয়ে মা'মলা করা সমীচীন হয়নি বলে আমি মনে করি।
‘শনিবারের বিকেল’ সিনেমাটি নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় হলি আর্টিজানে যে হা'মলা হয়েছিল, সেই ঘটনার ওপর ভিত্তি করে সিনেমাটি নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে দু’জন পু'লিশ অফিসার মা'রা গেছেন। আমাদের পু'লিশ, র্যা'ব, সে'নাবাহিনী অ'ত্যন্ত সাহসিকতার সাথে জ'ঙ্গিদের দমন করেছিল। সেন্সর বোর্ডের অ'ভিমত, সেই বিষয়গুলো সিনেমাটিতে আসেনি। সেজন্য এসব দৃশ্য সংযোজন করতে বলা হয়েছে। কিছুটা করা হয়েছে বলে আমাকে জানিয়েছে। কিন্তু সেটিও যথেষ্ট নয়। তারা আপিল করেছিলেন। আপিল কর্তৃপক্ষ সিনেমা'র পরিচালক ও প্রযোজককে জানিয়ে দেবে কী' কী' সংযোজন করা প্রয়োজন। সেগুলো সংযোজন হলে আমি মনে করি এই সিনেমা রিলিজ করার ক্ষেত্রে যে সমস্যা আছে, তা কে'টে যাবে।
চলচ্চিত্রের সাম্প্রতিক প্রবাহ, ওটিটি প্লাটফর্ম পরিচালনা এবং চলচ্চিত্র নির্মাণে সরকারি অনুদানসহ সংশ্লিষ্ট নানা প্রসঙ্গে চলচ্চিত্র নির্মাতা, পরিচালক, শিল্পী ও অংশীজনদের সঙ্গে বৈঠকে আলোচনা করেছেন মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।
ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ড. হাছান বলেন, ওটিটি একটি ক্রমবর্ধমান আধুনিক প্লাটফর্ম এবং বর্তমান পৃথিবীর বাস্তবতা। আম'রা এটিকে প্রমোট করতে চাই। ওটিটি প্লাটফর্ম এত বিস্তৃত, এতো ব্যাপকভাবে ক্রমবর্ধমান যে, এটিকে সেন্সর করা সম্ভব নয়। সেজন্য এটি একটি নীতিমালার ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়া বাঞ্ছনীয়।
তিনি বলেন, যারা ওটিটি প্লাটফর্ম নিয়ে কাজ করে, তাদের দিয়েই মন্ত্রণালয় একটি কমিটি করে দিয়েছে। সেই কমিটি কাজ করছে এবং সেই কমিটি অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ করে নীতিমালা চূড়ান্ত করবে। আম'রা এমন একটি নীতিমালা করতে চাই, যে নীতিমালা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং একইসঙ্গে আমাদের কৃষ্টি, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতিকে সংরক্ষণ করবে।
অনুদান নিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, সিনেমা শিল্প নানা সংকটের মধ্য দিয়ে এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে। আম'রা বাণিজ্যিক ছবিতে অনুদান দিয়েছি, কারণ সিনেমা বানিয়ে আসলে পয়সা উঠত না, এখন উঠবে। এখন আবার দর্শক ফিরে আসছে, সিনেমা হল বাড়ছে। পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে। একইসঙ্গে আর্টফিল্মে অনুদান দেওয়া প্রয়োজন। আর্টফিল্ম ব্যবসা করতে পারে না, কিন্তু আর্টফিল্মের প্রয়োজন আছে।
সিনেমা হল নির্মাণ ও সংস্কারে সরকারের হাজার কোটি টাকা ঋণ তহবিলের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের চলচ্চিত্র ইতোমধ্যে বিশ্বে কিছুটা জায়গা করে নিয়েছে। আমাদের অনেক ছবি এখন আ'মেরিকা-ইউরোপে চলে।
সংস্কৃতিসেবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রী হাছান বলেন, দেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতারা আমাদের জাতীয় জীবনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। দেশকে অ'পসংস্কৃতি, তরুণদের বিপথগামিতা, জ'ঙ্গিবাদ, মা'দকাসক্তি থেকে রক্ষার জন্য আসলে দেশে একটি সংস্কৃতি সুনামি দরকার বলে আমি মনে করি। সেটি যদি আম'রা করতে পারি তাহলে আম'রা আমাদের তরুণকে নতুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে পারব।
চলচ্চিত্র নির্মাতা মোরশেদুল ইস'লাম, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু প্রমুখ সাংবাদিকদের বলেন, বিদেশে অবস্থানকালেও দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গনের সমস্যা সমাধান করে দেওয়ায় আম'রা মন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছি। আমাদের দাবির প্রতিটি বিষয়েই অ'ত্যন্ত ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে।